হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের রৌমারীর উপজেলার সোনাভরি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে নদী তীরবর্তী এলাকায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহর রক্ষা বাঁধ ধসে যাচ্ছে।
বাঁধে ধস দেখা দেয়ায় বর্ষায় হুমকির মুখে পড়েছে রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী বাজার, রৌমারী-ঢাকা ডিসি সড়ক, একটি দাতব্য চিকিৎসালয়, ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১৩টি মসজিদ, তিনটি মাদরাসা, ৩০টিরও বেশি মৎস্য খামার ও প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এতে আতঙ্কিত প্রায় ৭১০ পরিবারের হাজারো মানুষ।
জিওবি জাইকা’র অর্থায়নে ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে এক কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় রৌমারী উপজেলার ধনারচর বাঁধ। এলজিইডি’র তত্বাবধানে ওই উপ-প্রকল্পটি ‘ধনারচর এফএমডি’নামে পরিচিতি পায়।
গত আট থেকে নয় বছর ধরে একটি চক্র ওই শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন কর্তিমারী ঘাট এলাকায় ভরাট হওয়া সোনাভরি নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু তোলা শুরু করায় গত বন্যায় প্রায় ১০ কিলোমিটার বাঁধের ৩৮০ মিটার জায়গা পুরো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
বালু তোলা বন্ধে স্থানীয়রা বাধা দিলেও কাজ হচ্ছে না। চক্রটি বালু তোলা অব্যাহত রেখেছে। যাদুরচর এলাকার মোনতাজ হাজির ছেলে সেলিম, ধনারচরের আবু কালামের ছেলে শামীম, বড়চরের সাঈদ আলীসহ ওই এলাকায় তিনটি ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে।
এলাকার শাজাহান আলী ও রমজান আলীসহ আরো অনেকে জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনরাত বালু তোলা হচ্ছে। এসব বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের খাল, বিল, জলাশয়, প্রতিষ্ঠান ও বসতভিটা।
স্থানীয় ধনারচর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, সোনাভরি নদী থেকে অবৈধ বালু তোলার ফলে গত বন্যায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যায়। এতে ৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল, বাড়িঘরসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে যায়।
তিনি অবৈধ বালু তোলা বন্ধ ও বন্যা আসার আগেই শহর রক্ষা বাঁধটি মেরামতের দাবি জানান। মেরামত না করা হলে আমামী বর্ষায় এ অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান।
সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, একটি মহল সোনাভরি নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু তোলছে। বালু তোলার কারণে বর্ষায় বাঁধটি ভেঙে যায় ও ধস দেখা যায়। বাঁধটি দ্রুত মেরামতের জন্য ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি করছি।
এ ব্যাপারে রৌমারী ইউএনও আল ইমরান জানান, অবৈধ বালু তোলার সঙ্গে জড়িতদের তালিকা করতে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে বলেছি। এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।